নিজস্ব সংবাদদাতা :
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে শিক্ষকদের বেতনবোনাস থেকে চাঁদা দাবি করলেন কলেজ গর্ভনিংবডির সভাপতি। চাঁদা না পেয়ে নিজেই কলেজে তালা ঝুলিয়ে দিলেন। বেতনভাতা দলিলে স্বাক্ষর না করায় ঈদের আগে বোনাস ও বেতন তুলতে পারছেন না ওই কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারিরা। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাঁচপোটল ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের দিলরুবা বেগম এবং জীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কায়সার হোসেন সম্প্রতি প্রভাষকের স্কেল থেকে সহকারি অধ্যাপক স্কেলে উন্নীত হন। কলেজের কারনিক গত রবিবার বেতনভাতা উত্তোলনের জন্য বিল ফরমে সই আনতে গেলে কলেজের গর্ভনিংবডির সভাপতি ইমরুল কায়েস মুরাদ দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
শিক্ষক দিলরুবা ও কায়সার হোসেন অভিযোগ করেন, বেসরকারি কলেজের জনবল কাঠামো অনুযায়ী যথানিয়মে শিক্ষা অধিদপ্তর তাদের দুজনকে সহকারি অধ্যাপক পদে বেতনভাতা ও ঈদ বোনাস চলতি এমপিওএর সাথে সমন্বয় করে দেন। কিন্তু কলেজ সভাপতি তাদের দুজনের নিকট দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় বিলে স্বাক্ষর করবেন না বলে জানিয়ে দেন। চাঁদা না পেয়ে মাদকাসক্ত সভাপতি গত রবিবার রাতে কলেজে তালা ঝুলিয়ে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভাপতি মুরাদ কয়েকজন মাদকাসক্তকে সঙ্গে নিয়ে রামদা ও ছোরাচাকুসহ কলেজ ক্যাম্পাসে মহড়া দেন এবং পরে কলেজের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। চাঁদা না পেয়ে সভাপতি আজ সোমবার কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তিনটি গাছ কেটে নেন।
এ ব্যাপারে বলিভদ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুরুজ্জামান মিন্টু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইমরুল কায়েস ধনবাড়ী উপজেলা ছাত্রদলের সম্পাদক ছিলেন। সম্প্রতি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।
এলাকাবাসি জানান, সরকারি দলে যোগদানের পর ইমরুল কায়েস মুরাদ নিজেই একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। এরপর তিনি মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন। তার ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। বলিভদ্র ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম এবং সম্পাদক রফিকুল ইসলাম তালুকদার এসব অভিযোগ ও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ জানান, বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা চলছে। ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা সিদ্দীকা জানান, তিনি ঘটনাটি জানেন না। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে কলেজের সভাপতি ইমরুল কায়েস মুরাদ জানান, অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ নানা অনিয়ম করে ওই দুই শিক্ষককে সহকারি অধ্যাপক পদে স্কেল পাইয়ে দিয়েছেন। তাই তিনি কলেজের বিলে স্বাক্ষর করেননি। তালা তিনি দেননি, এলাকাবাসি দিয়েছেন। তিনি গাছে কাটেননি। তিনি মাদকাসক্ত নন।